৫৬ মামলার তদন্ত শেষ, প্রতিবেদন দিতে পারছেন না কর্মকর্তারা!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১০ এএম, ২০ নভেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:২৫ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২৪
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ৫৬ মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। তবে দুদকের ঊর্ধ্বতনদের অনুমতি না মেলায় দুর্নীতির দালিলিক প্রমাণ পেয়েও তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ছয় বছর শেষেও কমিশনে প্রতিবেদন পেশ করতে না পারাকে রহস্যজনক মনে করছেন খোদ তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বেসিক ব্যাংক থেকে ঋণের নামে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা টাকা আত্মসাতের অভিযোগের খবর পেয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক। ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাতের তথ্য-প্রমাণ দিয়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ৫৬টি মামলা করে সংস্থাটি। আসামি করা হয় ব্যাংক কর্মকর্তা, ঋণগ্রহীতাসহ ১২০ জনকে। ২০১৫ সালে যখন এসব মামলার তদন্ত চলছিল তখন দুদক চেয়ারম্যান ছিলেন বদিউজ্জামান। তিনি তদন্ত শেষ করে যেতে পারেননি। পরের বছর চেয়ারম্যান হন ইকবাল মাহমুদ। তার পাঁচ বছরেও বেসিক ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা হয়নি। তবে আত্মসাতের অর্ধেক টাকা তার আমলে ফেরত আসে। ইকবাল মাহমুদের পর সংস্থাটির সর্বোচ্চ চেয়ারে বসেন মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। তার আমলের নয় মাসেও তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। দুদক আইনে ১৮০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও বেসিক ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনায় তদন্তের নামে কেটে গেছে ছয় বছর। উচ্চ আদালতও প্রশ্ন তুলেছে, তদন্ত অনন্তকাল চলবে কি-না! এ বিষয়ে দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক জানান, তদন্ত কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন দিতে নিয়মিত চাপ দেয়া হচ্ছে।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তদন্তের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কমিশন চাইলে ৫৬ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তিন বছর আগেই দেয়া যেতো। কিন্তু কমিশন থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্তে উঠে আসছে, ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ দেয়া হয়েছে। কোনোরকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিচালনা পর্ষদ প্রভাব খাটিয়ে যাচাই ছাড়াই ঋণ দিয়েছে। ঋণের নামে এসব অর্থ লুট করা হয়েছে।
দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, চার্জশিট দাখিল না করা পর্যন্ত কাউকে নিয়ে ভিন্নভাবে ভাবার কোনো সম্ভাবনাই নেই। অভিযুক্ত হওয়ার মতো অপরাধ করেছেন তার নাম চার্জশিটে থাকবেই। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দায়ী সবাইকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হবে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থ জালিয়াতিতে আবদুল হাই বাচ্চুসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তির যোগসাজশ পাওয়া গেছে।