৬৫৮ কোটি টাকার রেলের দেড় শ বগি আসছে নতুন বছরেই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ৯ নভেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:০২ পিএম, ১২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
দেশে এই প্রথম স্বয়ংক্রিয় এয়ার ব্রেক ও স্লাইডিং ডোর ব্যবস্থার দেড় শ মিটারগেজ বগি যুক্ত হতে যাচ্ছে রেলওয়ের বহরে। সবকিছু ঠিক থাকলে নতুন বছরের শুরুতেই অত্যাধুনিক সুবিধার এসব বগির প্রথম লট দেশে এসে পৌঁছাবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সুংশিন রোলিং স্টক টেকনোলজি থেকে কেনা এসব বগি যুক্ত হলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বগি সংকট কমবে।
দেড় শ অত্যাধুনিক বগির প্রথম লট দেশে আসার আগে এসব বগির টেকনিক্যাল ইন্সপেকশন বা প্রযুক্তিগত মান যাচাইয়ে গত ২ নভেম্বর কোরিয়া যান রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেখানে সুংশিন আরএসটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক এবং বগির টেকনিক্যাল ইন্সপেকশন করেন তারা। সবকিছু ঠিক থাকলে নতুন বছরের শুরুতেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বগির প্রথম লট দেশে আসবে।
সূত্র জানায়, ‘দেড় শটি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ (বগি) সংগ্রহ প্রকল্প’র আওতায় বগি কিনতে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই দক্ষিণ কোরিয়ার সুংশিন রোলিং স্টক টেকনোলজি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। চুক্তিতে রেলওয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রকল্প পরিচালক মো. হাসান মনসুর ও সুংশিন রোলিং স্টক টেকনোলজির কান্ট্রি ম্যানেজার জং বম লি।
দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে ৬৫৮ কোটি ৮১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় এসব বগি কিনছে রেলওয়ে। চুক্তি স্বাক্ষরের দিন থেকে ১৮ থেকে ৩০ মাসের মধ্যে বগিগুলোর সরবরাহ পাওয়ার কথা রেলওয়ের। এসব বগির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্টেইনলেস স্টিল বডি, বায়ো-টয়লেট, স্বয়ংক্রিয় এয়ার ব্রেক ব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং ডোরসহ আধুনিক সুবিধা।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কেনা দেড় শ বগির মধ্যে ৩০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সিøপিং বাথ বগি, ৩৮টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার বগি, ৪৪টি শোভন চেয়ার বগি, ১৬টি খাবার গাড়িসহ শোভন চেয়ার বগি, ১২টি পাওয়ার গাড়িসহ শোভন চেয়ার বগি, রাষ্ট্রীয় পরিদর্শনের জন্য ১টি বুলেটপ্রুফ গাড়ি, ১টি খাবার গাড়ি, ১টি পাওয়ার গাড়ি এবং ১টি পরিদর্শন কার রয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব বগি দেশে এলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতি পুরাতন ১৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী বগিতে প্রতিস্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে মিটারগেজ এবং ডুয়েলগেজ সেকশনে যাত্রীবাহী বগির সংকট কমে আসবে। এছাড়া আধুনিক, নিরাপদ ও উন্নত বগির মাধ্যমে যাত্রীসেবা নিশ্চিতকরণ, বর্ধিত যাত্রী চাহিদা মেটানোর জন্য নতুন ট্রেন চালু করা সম্ভব হবে।
জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পূর্বাঞ্চলে এখন যেসব যাত্রীবাহী বগি আছে, সেখানে স্বয়ংক্রিয় এয়ার ব্রেক ও স্লাইডিং ডোর ব্যবস্থার মতো আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নেই। কোরিয়া থেকে আনা বগিগুলোই হবে রেলওয়ের সবচেয়ে আধুনিক বগি। এসব বগি যুক্ত হলে রেলওয়ের বগি সংকট কমবে।
তিনি বলেন, বগি সংকটের কারণে এখন ‘এ’ শ্রেণির আন্তঃনগর ট্রেনে সর্বোচ্চ ১৬টি বগি যুক্ত করা যাচ্ছে। নতুন বগি পেলে এসব ট্রেনে সর্বোচ্চ ২২টি পর্যন্ত বগি যুক্ত করা সম্ভব হবে। এতে সহজেই বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে। রেলওয়ের আয়ও বাড়বে। অন্যদিকে দোহাজারী-কক্সবাজার রুটসহ অন্যান্য রুটেও নতুন এসব বগি দিয়ে দ্রুতগতির ট্রেন পরিচালনা করা যাবে।