এলসি খুলছে না ব্যাংক, রোজায় লোডশেডিংয়ের শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৭:৪২ পিএম, ২ অক্টোবর,
বুধবার,২০২৪
বৈদেশিক মুদ্রা ডলার সংকটের কারণে জ্বালানি তেল আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় এলসি (ঋণপত্র) খুলছে না ব্যাংক। ফলে তেলের অভাবে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে আগামীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। তাই আসছে পবিত্র রমজান মাসকে লোডশেডিং মুক্ত রাখতে হলে জ্বালানি তেল আমদানির জন্য জরুরি ডলার সহায়তা দরকার। তা না হলে লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার এক বৈঠকে এই আশঙ্কার কথা জানান দেশের বিদ্যুৎখাতের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সংগঠন-বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) প্রতিনিধিরা। বিআইপিপিএ সভাপতি ফয়সাল করিম প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে গভর্নর ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকটি গণমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত ছিল না। বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতেও রাজি হননি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। বৈঠকে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেলের এলসি খুলতে ডলার সহায়তা চাওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিআইপিপিএ সভাপতি ফয়সাল করিম বলেন, জ্বালানি তেল আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছি না। ডলার সংকটের কারণে স্থানীয় ব্যাংকগুলো এলসি খোলার জন্য প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দিতে পারছে না। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সহায়তা চেয়েছি। কারণ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করা দরকার তা পারছি না। ফয়সাল করিম উদাহরণ দিয়ে বলেন, সামিট পাওয়ার তেল আমদানির জন্য প্রতি মাসে তিনটি এলসি খুলে থাকে, চলতি মাসে ২টি এলসি খুলতে পারলেও আরেকটি খুলতে পারেনি। এমন ঘটনা সবার ক্ষেত্রেই ঘটছে। প্রতিমাসে ১৫০ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের তেল আমদানি করতে হয়। এলসি খোলার পর তেল দেশে আসতে প্রায় ৪০ দিন সময় লাগে।
তিনি বলেন, আগামী মাসের শেষের দিকে রোজা শুরু। এখন যদি ২০০ মিলিয়ন ডলার সাপোর্ট পাওয়া যায়, তাহলে রমজানে আশা করছি লোডশেডিং মুক্ত রাখতে পারবো। পর্যাপ্ত তেল না পেলে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা থাকবে বলে জানান বিদ্যুৎ খাতের এ উদ্যোক্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংক কী আশ্বাস দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবসময় সাপোর্ট দিয়ে আসছে। তবে এখন খাদ্য আমদানি নিশ্চিতসহ আরও বেশ কয়েকটি বিষয় দেখতে হচ্ছে। সবকিছু বিবেচনায় এ বিষয়টিও বিবেচনা করবেন গভর্নর।
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ডলার সংকটে এলসি খুলতে পারছে না বলে বিআইপিপিএর পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, প্রয়োজনীয় তেল আমদানি করতে না পারায় অনেক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে লোডশেডিংয়ের মধ্যে পড়তে হবে। তাই তেল আমদানির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জরুরি ডলার সহায়তা চায় সংগঠনটি।