মার্চে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে ডলার সহায়তা চায় বিপ্পা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩১ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:১৯ পিএম, ২ অক্টোবর,
বুধবার,২০২৪
সামনে আসছে বোরোর সেচ মৌসুম। আগামী মাসে শুরু হচ্ছে রমজান। এতে বিদ্যুতের চাহিদা যাবে বেড়ে। আবার গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু হওয়ায় মার্চে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে। তাই আগামী মাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোয় বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে।
এজন্য ফার্নেস অয়েল আমদানিতে এলসি খুলতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলার সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন (বিপ্পা)। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ সহায়তা চান বিপ্পা সভাপতি ফয়সাল খান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফয়সাল খান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেল আমদানির জন্য ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে যে পরিমাণ তেল আমদানির প্রয়োজন হয়, তার চেয়ে এখন ৩০ শতাংশ কম আমদানির এলসি খোলা যাচ্ছে। তাই আগামী মাসগুলোতে যাতে নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় সে জন্য ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এখন তেলের দাম কমে যাচ্ছে, তাই বেশি সাপোর্ট লাগবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এলসি খোলা ও নিষ্পত্তির জন্য ডলার সহায়তা চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দেয় বিপ্পা। এতে বলা হয়, কোভিড ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পুরো বিশ্ব সংকটে পড়ে যায়। এ সময় দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। তাই তাদের এসব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে সমস্যাগুলো তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, বাজারে ডলার সংকটের কারণে এ সমিতির সদস্যভুক্ত (৫৯টি) কোম্পানির পক্ষে বিদ্যুৎ খাতের প্রয়োজনীয় ফার্নেস অয়েল, লুব ওয়েল ও খুচরা যন্ত্রাংশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যমান আর্থিক সংকট ও ডলার স্বল্পতার কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার বা চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় তেল, লুব অয়েল ও খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানির ঋণপত্র বা এলসি খুলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বিদ্যুৎ উৎপাদন বাবদ প্রতি মাসে প্রদেয় বিল সময়মতো পরিশোধ না করায় কোম্পানিগুলো চরম মাত্রায় নগদ অর্থের সংকটে পড়েছে। এমন অবস্থায় সমিতির অধিকাংশ সদস্য কোম্পানি চলতি মূলধনের অভাবে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান হ্রাস পাওয়ায় এ ক্ষতি আরও বেড়ে যাচ্ছে। মূলত পাওনা পরিশোধে পিডিবি অস্বাভাবিক মাত্রায় দেরি করায় কোম্পানিগুলোর লোকসানের বোঝা বেড়েই চলেছে।
এ ধরনের বর্ণনা দিয়ে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর সমিতির পক্ষ থেকে চলতি বোরো মৌসুমের সেচ কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা ও রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকে চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি। প্রস্তাবগুলো হলো স্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় ফার্নেস অয়েল, লুব অয়েল ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির জন্য জরুরি ভিত্তিতে এলসি খোলার ব্যবস্থা করা; বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অনিষ্পন্ন এলসি নিষ্পত্তির জন্য জরুরি ভিত্তিতে ডলার সরবরাহ বাড়াতে হবে; বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর জন্য ব্যাংকঋণে এক অংকের সুদহার নিশ্চিত করতে হবে; পিডিবি যাতে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে পারে সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পিডিবিকে প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহ করার কথা বলা হয়।