বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করে ট্র্যাজিক নায়ক এমবাপ্পে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০৪ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৩৪ এএম, ৭ অক্টোবর,সোমবার,২০২৪
একার কাঁধে দলকে টানলেন তিনি। আর্জেন্টিনার হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। গতবার বিশ্বকাপের ফাইনালে করছিলেন একটি গোল। দেশ জিতেছিল বিশ্বকাপ। এবারের ফাইনালে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। ১৯৬৬ সালের ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্টের পরে দ্বিতীয়বার কোনো ফুটবলার ফাইনালে এই কীর্তি করলেন। দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত ফুটবল খেললেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেরে মাঠ ছাড়তে হলো এমবাপ্পেকে।
খেলার জন্য নায়কের মর্যাদা পেলেও বিশ্বকাপ জেতা হলো না। এবারের বিশ্বকাপে আট গোল করে সোনার বুট এমবাপ্পের দখলে। কিন্তু তার পরও চোখের পানিতে মাঠ ছাড়লেন তিনি। তবে যাওয়ার আগে বুঝিয়ে দিলেন, আগামী দিনে বিশ্ব ফুটবলের মঞ্চে একাই দাপিয়ে বেড়াবেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার।
প্রথমার্ধে এমবাপ্পেকে আটকে রেখেছিল আর্জেন্টিনা। তার প্রধান অস্ত্র প্রান্ত ধরে দৌড়। যে গতিতে তিনি দৌড়ন তার সাথে একমাত্র উসেইন বোল্টের দৌড়ের তুলনা হয়। সেই দৌড় বন্ধ করার জন্য মোলিনা ও ম্যাক অ্যালিস্টারকে রেখেছিলেন আর্জেন্টিনার কোচ লিয়োনেল স্কালোনি। ফলে বার বার আটকে যাচ্ছিলেন তিনি। ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশঁ অলিভিয়ের জিহুকে তুলে নেয়ায় প্রধান স্ট্রাইকারের ভূমিকায় চলে যান এমবাপ্পে। ফলে আরো বেশি নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। প্রথমার্ধে মাত্র একবার আর্জেন্টিনার বক্সে ঢুকতে পেরেছিলেন এমবাপ্পে।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে খেলা যত গড়াল তত ম্যাচে দাপট দেখাতে শুরু করলেন এমবাপ্পে। বয়সের ছাপ কোথায় হয়তো দেখা গেল মেসির খেলায়। বল ধরছিলেন। কিন্তু সেভাবে আক্রমণ তৈরি করতে পারছিলেন না। অন্য দিকে এমবাপ্পে নিজের পছন্দের জায়গায় খেলা শুরু করতেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন। বক্সের মধ্যে ওটামেন্ডি ফাউল করায় পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। জোরালো শটে গোল করেন এমবাপ্পে। দু’মিনিট পরেই বক্সের মধ্যে থেকে ডান পায়ের দুরন্ত শটে ফ্রান্সের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন এমবাপ্পে। চলন্ত বলে তিনি যে শট মারলেন তা এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোল। নির্ধারিত সময়ের শেষ ১০ মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত ফ্রান্স। এমবাপ্পের জোরাল শট একটুর জন্য বাইরে বেরিয়ে যায়।
অতিরিক্ত সময়ে মেসির গোলে আর্জেন্টিনা আবার এগিয়ে গেলে মনে হচ্ছিল ফ্রান্সের হার নিশ্চিত। কিন্তু তখনো মাঠে ছিলেন এমবাপ্পে। বক্সের বাইরে থেকে গোল লক্ষ্য করে শট মারেন তিনি। বক্সের মধ্যে সেই বল পারেদেসের হাতে লাগায় পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। আরো এক বার পেনাল্টি থেকে গোল করেন এমবাপ্পে। সেই সাথে মেসিকে টপকে বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি আট গোল হয়ে যায় তার। কিন্তু তার পরেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিততে পারল না ফ্রান্স। টাইব্রেকার থেকে এমবাপ্পে আবার গোল করলেও তার দলের দুই সতীর্থের শট বাঁচিয়ে দেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। শেষ পর্যন্ত চোখের পানিতে বিশ্বকাপ ছাড়তে হলো তাকে। তবে নিজের দ্বিতীয় বিশ্বকাপেই বিশ্বের সেরাদের তালিকায় ঢুকে পড়লেন এমবাপ্পে।