বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ল আরও ১০ দিন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৩ এএম, ৭ জুন,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৪৭ এএম, ১২ অক্টোবর,শনিবার,২০২৪
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ আরও ১০ দিন বাড়ল। গত ৬ জুন মধ্যরাত থেকে ১৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়ে আজ রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনা ভাইরাস জনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ আরোপের সময়সীমা আগামী ৬ জুন মধ্যরাত থেকে ১৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। একই সঙ্গে পাঁচটি শর্ত দেয়া হয়েছে।
যা আছে ৫ শর্তে-
১. সব পর্যটনস্থল, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
২. জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান/ওয়ালিমা, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি), রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।
৩. খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ (টেকওয়ে/অনলাইন) করতে পারবে এবং আসন সংখ্যা অর্ধেক সেবাগ্রহীতাকে সেবা প্রদান করতে পারবে।
৪. কোভিড ১৯-এর উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন জেলাগুলোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সংশ্লিষ্ট কারিগরি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে নিজ নিজ এলাকায় সংক্রমণ প্রতিরোধে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
৫. আন্তঃজেলাসহ সব ধরনের গণপরিবহন আসন সংখ্যা অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে অবশ্যই যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
এর আগে চলমান বিধিনিষেধ আরও ১০ দিন বাড়ানোর প্রস্তাব করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দেয়ার পর বিধিনিষেধ বাড়িয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আজ রবিবার মধ্যরাত থেকে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। পরে ৬ দফা লকডাউন বা বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হয়। গত ২৩ মে থেকে ৩০ মে রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়িয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আন্তঃজেলা বাস, লঞ্চ এবং ট্রেনসহ সব ধরনের গণপরিবহন চলার অনুমতি দেয়া হয়। একই সঙ্গে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো আসন সংখ্যার অর্ধেক মানুষকে বসিয়ে সেবা দেয়ার অনুমতি পায়। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস, আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে বিশেষ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ সরকারের নির্বাহী আদেশে সীমিত পরিসরে খোলা রয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বিধিনিষেধ বাড়ানো বা তুলে দেয়ার বিষয়ে সরকার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। কারণ করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শঙ্কা হয়ে ঝুলে আছে। সবকিছু একেবারে খুলে দিয়ে মানুষের বেপরোয়া আচরণ নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে বিপর্যয় হতে পারে। আবার অফিস-আদালত দীর্ঘদিন বন্ধ করে রাখাও ক্ষতির কারণ হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন সরকার। এখন সীমান্ত এলাকাগুলোতে লকডাউন দেয়া হচ্ছে। সেটা বহাল রাখার সঙ্গে বেশি সংক্রমিত এলাকায় লকডাউন আরোপ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের ক্ষেত্রে জোর দেয়াসহ কিছু বিধিনিষেধ তো থাকবেই।