কিছু রাজনৈতিক দল পার্শ্ববর্তী দেশের ফাঁদে পা দিয়েছে : তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৪ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৬:৩০ পিএম, ১১ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র এখনো থেমে যায়নি, চলমান আছে। আমাদের দেশের কিছু রাজনৈতিক দল বিভ্রান্তিমূলক কথা বা বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশের ফাঁদে পা দিয়ে। সকল ষড়যন্ত্রের বিষদাঁত ভেঙে দিয়ে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
আজ রবিবার বিকেলে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া হাইস্কুল ফুটবল মাঠে কলারোয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভার্চুয়াল বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সদ্য কারামুক্ত সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপির রাজনীতি উৎপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতি। বিএনপি চায় দেশের প্রতিটি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে। আমরা সম্ভাবনাগুলোকে বের করে আনতে চাই। আমি ৬ হাজার মাইল দূরে থাকলেও আমার মনটা পড়ে থাকে বাংলাদেশে।
তিনি বলেন, সাতক্ষীরায় চিংড়ি চাষের ঘেরকেন্দ্রিক বেড়িবাঁধ নিয়ে যে আতঙ্ক, সেই আতঙ্ককে কাটাতে বাঁধটি শক্ত ও মজবুত করতে চাই। এভাবে দেশের প্রতিটি জেলার সম্ভাবনা আছে, সেগুলো বের করে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, সম্ভাবনাগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সরকার দরকার। জনগণের সরকারই জনগণকে নিয়ে ভাবে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জনগণের ভোটে নির্বাচিত ছিল বলেই কৃষকের জন্য খাল খনন করেছিলেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বইয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। জনগণের সরকারই জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্বৈরাচারের পতন হয়তো হয়েছে, কিন্তু ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে। সব ষড়যন্ত্রের বিষদাঁত ভেঙে দিয়ে জাতীয়তাবাদী সব শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশের ফাঁদে পা দিয়ে কিছু রাজনৈতিক দল বিভ্রান্ত হয়ে কিছু কথা বলেছেন। এ জন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে। গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলবে।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, দেশের ভেতরে ও বাইরে যারা কলকাঠি নাড়ছে, তারা চায় না দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ নির্যাতিত হয়েছে। কলারোয়া সাতক্ষীরার মানুষ এর প্রমাণ। দুই যুগ ধরে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে জনগণের সরকার দরকার। আর জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে গেলে রাস্তা একটিই। এ জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে বিএনপির লাখ লাখ মানুষ খুন, গুম ও মামলার শিকার হয়েছে। স্বৈরাচার পালিয়েছে। কিন্তু জনগণের রাজনৈতিক অধিকার এখনো অর্জিত হয়নি। এ জন্য আমাদের আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হবে- ততক্ষণ পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলবে।
সভাপতির বক্তব্যে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, এই মাঠে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৭ বার ভাষণ দিয়েছিলেন। এবার তার উত্তরসুরি তারেক রহমান আজ এই মাঠে বক্তব্য দিয়েছেন। যিনি আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান। ৭০ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে কারাগারে ছিলাম, আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই, আমি মুক্ত, একথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
তিনি বলেন, আমার নেত্রী কোনো দিন পালাননি, পালিয়েছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা, আমার নেত্রী পালান না, তারেক রহমান আমার পরিবারের খোঁজখবর নিতেন, যখন আমি কারাগারে ছিলাম। এজন্য তারেক রহমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, আমি মিথ্যা মামলায় সাজা নিয়ে কখনো ভয় পাইনি। আমার সাথে একই মামলায় কারাগারে থাকা ৪ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি তাদেরকে শহীদ হিসেবে ঘোষণা করছি। তিনি এর বিচার আল্লাহর কাছে দেন এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিচার দাবি করেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দীন, অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তারিকুল হাসান, আইনুল ইসলাম নান্টা প্রমুখ।