লেখক মুশতাকের মৃত্যুর বিষয় লিখিতভাবে জানাতে বললেন হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৪ এএম, ২ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৪২ পিএম, ৫ অক্টোবর,শনিবার,২০২৪
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের (৫৩) মৃত্যুর বিষয়টি লিখিতভাবে জানাতে বললেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার এ সংক্রান্ত এক মামলার জামিন শুনানিকালে প্রয়াত মুশতাকের আইনজীবীকে এ নির্দেশ দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। আজ কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরের জামিন শুনানির সময় আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়–য়া বলেন, লেখক মুশতাক মৃত্যুবরণ করেছেন। তখন আদালত বলেন, সেটি আপনি হলফনামা আকারে জানান। তখন তার জামিন আবেদন অ্যাবেট (বাদ) করা হবে।
জবাবে জ্যোতির্ময় বড়–য়া বলেন, মঙ্গলবারের মধ্যে হলফনামা আকারে জমা দিতে পারব। এরপর আদালতে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি করেন জ্যোতির্ময় বড়–য়া। তার শুনানির পর আদালত এ বিষয়ে ৩ মার্চ (বুধবার) জবাব দেয়ার জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে বলেছেন। একইসঙ্গে ওইদিন আদেশের জন্য দিন রেখেছেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাত সোয়া ৮টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মুশতাক আহমেদকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানার ছোট বালাপুর এলাকার মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। ওইদিন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, সন্ধ্যায় কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মুশতাক আহমেদ। এ সময় তাকে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মুশতাক আহমেদকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি এ মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে রমনা থানা পুলিশ। যেখানে জুলকারনাইন খান ওরফে সামিসহ অন্য আট জনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়।
অব্যাহতির সুপারিশ পাওয়া আসামিরা হলেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান, জার্মান প্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, নেত্র নিউজের সম্পাদক ও সুইডেন প্রবাসী তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরি প্রবাসী জুলকারনাইন শায়ের খান ওরফে সামি, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম ও ফিলিপ শুমাখার। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন মামলাটি অধিকতর তদন্তে সিটিটিসিকে নির্দেশ দেন। ২০২০ সালের ৫ মে র্যাব-৩, সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মিনহাজসহ ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা করেন। এছাড়া আরও অজ্ঞাতপরিচয় ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণœ করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছেন। যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। ওই পেজের এডমিন শায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ সমাচার, স্বপন ওয়াহিদ, মোস্তাক আহম্মেদ নামীয় ফেসবুক আইডিসহ পাঁচ জন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে ফেসবুক পেজটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করছেন।