ভূমিকম্পের ঝুঁকির মাত্রা বাড়িয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ন
ভয়াবহ ভূমিকম্পের আশঙ্কা : দেশে ৪৩ ভাগ এলাকা উচ্চ মাত্রার ঝুঁকিতে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:১৭ এএম, ৪ অক্টোবর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৫৬ পিএম, ৪ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
আগামী দিনে দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগের নাম হতে পারে ভূমিকম্প। গেল কয়েক দশক ধরেই এমন আশঙ্কাও করে আসছেন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ভূতাত্ত্বিকরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে যতটা না ক্ষয়ক্ষতি হবে ভূমিকম্পে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে। আর এমন ভয়াবহতা থেকে সুরক্ষা পেতে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার পাশাপাশি মানুষের সচেতনতা বাড়ানো পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। গেল ১৪ বছর ধরে আবহাওয়া অধিদপ্তরে ভূমিকম্পের তাৎক্ষণিক গতিপ্রকৃতি নিয়ে কাজ করছেন আবহাওয়াবিদ মমিনুল ইসলাম। তিনি দেখালেন চলতি বছরের শুরু থেকেই দেশে ছোট ছোট ভূমিকম্প হয়েছে বহুবার। এরমধ্যে কেবল গেল তিন মাসেই দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়েছে সাতবার! আবহাওয়াবিদ মমিনুল ইসলাম বলেন, সিলেটে যদি ৭ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হয় তখন এর প্রভাব ঢাকাতেও পাওয়া যাবে। এই আবহাওয়াবিদের মতোই শঙ্কা করছেন ভূতাত্ত্বিকরাও।
তারা বলছেন, তিনটি গতিশীল প্লেটে অবস্থানের কারণেই চরম ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ৪৩ ভাগ এলাকা উচ্চ মাত্রার ৪১ ভাগ মধ্যম আর ১৬ ভাগ নিম্ন মাত্রার ঝুঁকিতে।
ভূতত্ত্ববিদ হুমায়ুন আখতার বলেন, দুই প্লেটের পরস্পর সংঘর্ষের কারণে যে শক্তির সৃষ্টি হচ্ছে তা একটা সময় ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এমন অবস্থায় ভূমিকম্পের ঝুঁকির মাত্রা আরও বাড়িয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ন। কারণ পুরনো ভবন তো বটেই এমনকি নতুন ভবন নির্মাণেও খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না ভূমিকম্পের বিষয়টি। ফলে একটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পই ধ্বসে পড়বে বেশির ভাগ ভবন।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আনসারী বলেন, আমরা খারাপ মাটি দিয়ে বাড়ি তৈরি করছি। নানান পরিকল্পনা নেয়া হলেও তার একটিও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এমন ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা পেতে এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করার পরামর্শ ভূতত্ত্ব আর নগরপরিকল্পনাবিদদের। বলছেন, এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের সঙ্গে সচেতন করতে হবে সাধারণ মানুষকেও। নয়তো আগামীতে যেদিন অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য সেটি কেবলই হতে পারে চরম ধ্বংসের ইতিহাস।