
অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান
জিয়াউর রহমান : পররাষ্ট্রনীতিতে যিনি এনেছিলেন গতিশীলতা
প্রকাশ: ১০:৩৭ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৪৬ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৩

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এক ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ। যিনি মাত্র চার বছরের শাসন আমলে দেশের উন্নয়নের জন্য কেবল প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতাই সুসংহত করেননি। বরং তিনি নিজ দেশের পররাষ্ট্রনীতিতেও এনেছিলেন গতিশীলতা। তার অনন্য অর্জনের মধ্যে পররাষ্ট্রনীতি এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।
সার্ক প্রতিষ্ঠাতার ব্যাপারে কথা বলতে গেলে প্রথমে অবশ্যই একজন কালজয়ী ও সফল রাষ্ট্রনায়কের কথা বলতে হবে। যার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতায় আবদ্ধ হয়Ñতিনি আর কেউ নন, তিনি বাংলাদেশের সর্বপ্রথম রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আর যিনি ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ক্ষনজন্মা রাষ্ট্রনায়ক। নানা কারণে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর সততা, নিষ্ঠা, গভীর দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা, নেতৃত্বের দৃঢ়দা প্রভৃতি গুণাবলী এ দেশের গণমানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল। তিনি ছিলেন একজন পেশাদার সৈনিক। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল অন্য কোনো রাষ্ট্রনায়কের ভাগ্যে তা জোটেনি। মাত্র ছয় বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। কিন্তু সাধারণ মানুষ তাঁর ওপর ছিল আস্থাশীল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর ওপর মানুষের এই আস্থায় কোনো চিড় ধরেনি। তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম স্বীকৃত রাষ্ট্রপতি, এবং তিনিই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে এ দেশকে হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ একদল লোক বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষকে বিপদের মুখে ফেলে দিয়ে নাটক সাজিয়ে পাকিস্তানের কারাগারে রাজকীয় হালে অবস্থান নেন। সেই রাতেই ৭ কোটি বাঙ্গালীকে মহান আল্লাহর ইচ্ছায় বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন এই রাষ্ট্রনায়ক। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপন হিসেবে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের কূটনৈতিক নীতিমালায় বিশেষ পরিবর্তন আনেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশের প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তির দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তি অন্য রকম ছিল। তিনি দেশের মঙ্গলের জন্য প্রতিটি পরাশক্তির সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন ।
তিনি ডান এবং বাম সমস্ত রাজনৈতিক দেশগুলোর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহযোগিতামূলক সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করে গেছেন। প্রাথমিকভাবে তিনি অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য চেষ্টা করেন। অন্যদিকে পশ্চিমের দেশগুলোা সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা ছিল তার। পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করেন, জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়ন বলয় থেকে বেরিয়ে আমেরিকা ও চীনের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। এক্ষেত্রে সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের সাথে স্থাপিত সম্পর্ক অনেকটা অর্থনৈতিক হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সাথে স্থাপিত সম্পর্কে সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক ইস্যুগুলোও প্রাসঙ্গিক ছিল। বিশেষ করে চীনের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করার মাধ্যমে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পূণর্গঠনের কাজ অনেকটা তরান্বিত করেছিলেন। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্রাগারের দিকে তাকালে সেই সত্যই প্রতিফলিত হয়। সামরিক পূণর্গঠনের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উন্নত কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে জিয়া রাষ্ট্রীয় বিমান পরিবহন সংস্থা বিমানের আধুনিকীকরণও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
জিয়া ভারত-রিরোধী ভূমিকায় যাননি। তবে তিনি চীন, আমেরিকা এবং সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ তিনটি দেশের সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। ১৯৭৫ সালে আগস্ট পর্ষন্ত সৌদি আরব ও চীনের কাছে থেকে বাংলাদেশের স্বীকৃতি ছিল না। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সৌদি আরব ও চীনের সাথে দ্রুত সম্পর্ক উন্নীত করেন। আন্দোলনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অপপ্রচারের কারণে সৌদি আরব ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনকে সমর্থন করেননি। বাংলাদেশ সম্পর্কে কয়েকটি আরব দেশের যে ভ্রান্তি ছিল তা দূর করতে বঙ্গবন্ধুর সরকার দু’জন অদম্য কূটনীতিককে পাঠিয়েছিলেন : ইতালিতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ইকবাল আতহার, যিনি বাংলাদেশে চলে গিয়েছিলেন এবং আতাউর রহমান, যিনি সুদানে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান, লিবিয়া ও সৌদি আরব ছাড়া অনেক আরব দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে এগিয়ে এসেছিল। এই দেশগুলো মুসলিম দেশ পাকিস্তানের টুকরো টুকরো হয়ে অমুসলিম দেশ ভারতের সমর্থনে নতুন জাতির জন্মের সাথে দেশগুলোর সমর্থন জানায়নি।
জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের জানুয়ারিতে চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টা শুরু করেন যখন তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে সে দেশে সফর করেন। জিয়া প্রশাসন যেমন চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য আঁকড়ে ধরেছিলো তেমনি সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের নতুন শাসনব্যবস্থার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা এবং পুরানো বিশ্বস্ত বন্ধুর মূল্যে চীনের খুব বেশি ঘনিষ্ঠ না হতে রাজি করাই উপযুক্ত বলে মনে করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাত্মক সমর্থন প্রদান করেন। অন্যদিকে উচ্চ পর্যায়ে সফর বিনিময় বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বোঝাপড়া, সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। ১৯৭৮ সালের মার্চ মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুয়াং হুয়ার সাথে চীনের ভাইস-প্রিমিয়ার লি শিয়েন নিয়েনের বাংলাদেশ সফরকে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। যদিও চীন-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তিন বছরের ব্যবধানে যৌক্তিকভাবে ভালোভাবে গড়ে উঠেছিল, ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে যখন তার ভাইস-প্রিমিয়ার ঢাকায় অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন তখন ভিয়েতনামের প্রতি বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব চীনারা দৃশ্যত গ্রহণ করেনি। ভিয়েতনামের ভাইস-প্রিমিয়ারকে এমন এক সময়ে অভ্যর্থনা করা হয়েছিল যখন কাম্পুচিয়া ভিয়েতনামের আক্রমণের পরে ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে চীনা প্রতিশোধমূলক আক্রমণের পরে চীন ও ভিয়েতনামের মধ্যে সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক, রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক এবং আর্থ-সামাজিক কারণ এবং ব্যক্তিগত ইচ্ছা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভারত বিরোধী মনোভাবের পরিপ্রেক্ষিতে তার মনোভাবের উদাসীনতার নোট নিয়ে ভারতে যাত্রা শুরু করেছিলেন, তবে তিনি ভূ-রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কথা মাথায় রেখে সংঘাত এড়াতে সতর্কতার সাথে একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হন।
১৯৭৭ সালের মার্চ মাসে মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বে জনতা দল ভারতে ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নতি হয়। জিয়াউর রহমান সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দমনে দেশাই সরকারের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা পায়। ফারাক্কা ব্যারাজ ইস্যুতে মোরারজি দেশাই বাংলাদেশের সমস্যা বুঝতে পেরেছিলেন। বিশেষজ্ঞ এবং মন্ত্রী পর্যায়ের ধারাবাহিক বৈঠকের পর ফারাক্কায় গঙ্গার জল বণ্টনের গ্যারান্টি ক্লজ সম্বলিত একটি পাঁচ বছরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ডিসেম্বর, ১৯৭৭-এ। ১৯৭৯, বাংলাদেশের জন্য গঙ্গা থেকে সেচের পানি বরাদ্দের জন্য একটি যৌথ নদী কমিশন গঠনে সম্মত হয়। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বিদ্যমান বিপুল সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে, যা ব্যাপকভাবে বহু-সাংস্কৃতিক, বহু-ভাষিক এবং বহু-ধর্মীয় নিদর্শনের মোজাইক, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আঞ্চলিক সহযোগিতার ধারণা নিয়ে আলোচনা করেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৭৯ সময়কালে এই অঞ্চলের বিভিন্ন রাজধানীতে সফরের সময় প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দ্বারা উৎসাহিত হয়ে জিয়াউর রহমান প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন যে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য কিছু প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার উপায়গুলো অনুসন্ধান করা।
জিয়াউর রহমানের শাসন আমলে মুসলিম বিশে^র সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। বাংলাদেশ মুসলিম বিশে^র কাছাকাছি এসেছে যা বাংলাদেশ এবং তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে নতুন ভাবে দেখতে শুরু করে। মুসলিম দেশগুলোর সাথে ইসলামী সংহতির ভিত্তিতে সম্পর্ক জোরদার করা জন্য বাংলাদেশের সংবিধানে একটি অনুচ্ছেদ যোগ করেন জিয়াউর রহমান। মধ্যপ্রাচ্যের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীরণের সুবিধা ও উপকারিতা বাংলাদেশ আজও পুরোমাত্রায় উপভোগ করছে কেন না বর্তমানে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো যে বিপুল সংখ্যায় দেশের প্রবাসী শ্রমিকদের কর্মস্থলে পরিণত হয়েছে তার রূপরেখা জিয়াই রচনা করে গিয়েছিলেন। চীন ও আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের একটি ভালো কাজের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বাংলাদেশের কাছাকাছি এসেছিল। তিনি বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন এবং দেশের বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য অনেক দেশ সফর করেন। তাঁর এই বিদেশ সফর অনেক সাফল্যে সমৃদ্ধ ছিল। বাংলাদেশ ১৯৭৮ সালে নিরাপত্তা পরিষদে তার একটি অস্থায়ী আসনে নির্বাচিত হয় এবং জাতিসংঘের সদস্যদের কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে জড়িত হয়। প্রেসিডেন্ট জিয়াই দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতার ধারণার সূচনা করেছিলেন এবং তার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জোট সার্ক গঠনের ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। মজার ব্যাপার হলো ফারাক্কা ওয়াল স্ট্রিট জিয়ার শাসন আমলেই ১৯৭৭ সালে ৫ নভেম্বরে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তখন উভয় দেশের নেতৃত্ব তুলনামূলকভাবে নতুন ছিল। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই ২৪ মার্চ, ১৯৭৭-এ শপথ গ্রহণ করেছিলেন। আর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এক মাস পরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।
১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের বয়স ছিল মাত্র সাত বছর। সবে মাত্র একটা রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। দেশের অস্থিরতা থিতু হওয়ার আগেই জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন। দেশের অর্থনীতি তখন নড়বড়ে। দুই লাখ উদ্বাস্তুর খাদ্য ও আশ্রয় দেওয়া দেশের সামর্থ্যরে বাইরে ছিল। প্রথম মাসে জেলা থেকে তাদের ত্রাণসামগ্রী দিয়ে সরকার মোকাবিলা করে। এরপর অন্যান্য জেলা থেকেও আরও সামগ্রী পাঠানো হয়। কিছুদিন পর বিদেশী সাহায্য আসতে শুরু করে। প্রথমে আন্তর্জার্তিক রেডক্রস থেকে তারপর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি সংস্থা থেকে। বার্মা সরকার উদ্বাস্তুদের অবাধ প্রত্যাবর্তনের জন্য একটা চুক্তি স্বাক্ষর করে হয়েছিল। জিয়ার শাসন আমলে ঘুমধুুম সীমান্ত চৌকি দিয়ে প্রথম পর্যায়ের সময় ছিল ১৯৭৯ সালের মাঝামাঝি। কিন্তু জিয়াউর রহমান উপলব্ধি করেছিলেন যে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার বদলে সহযোগিতা স্থাপিত হলে বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে যার ফলে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলো উপকৃত হবে। এই লক্ষ্যে তিনি সার্কের রূপরেখা রচনা করেন যা পরে ১৯৮৫ সালে বাস্তবে রূপ নেয়। সার্ক মূলত প্রতিষ্ঠা করা হয় দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা করার লক্ষ্যে। এটি অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং উন্নয়নের যৌথ আত্মনির্ভরশীলতার জন্য নিবেদিত ছিল। যা একমাত্র সম্ভব হয়েছিল প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদানের কারণে।
সার্কের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসমূহ হলোÑবাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটান এবং ২০০৭ সালে আফগানিস্তান সার্কের সদস্য পদ লাভ করে। রাষ্ট্রের শীর্ষ বৈঠক সাধারণত নির্ধারিত এবং পররাষ্ট্র সচিবদের সভা দুই বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়। নেপালের কাঠমান্ডুতে সার্কের সদর দফতর অবস্থিত। সার্ক সদর দপ্তর ১৬ জানুয়ারি ১৯৮৭ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং নেপালের প্রথিতযশা রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব এটি উদ্বোধন করেন। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং উন্নয়নের মাত্রা বৃদ্ধি করতে প্রতি দুই বছর পর পর সার্ক শীর্ষ সম্মেলন করা হয়। প্রতিবছরই সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে একজন করে প্রতিনিধি ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৩ ও ২০০৫ সালে দুই-দুইবার সার্ক সম্মেলনের প্রতিনিধি সভাপতি নির্বাচিত হন বাংলাদেশের তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বর্তমান ২০ দলীয় জোটনেত্রী, দেশ-মাটি ও মানুষের মা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সার্ক মূলমন্ত্র থেকে সরে এসে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বাংলাদেশের গোপনীয় ট্রানজিট চুক্তি করেছে। যা সার্ক দেশগুলোর মধ্যে মোটরযান ও রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা এবং বিদ্যুৎ খাতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।
পরিশেষে বলতে চাই, যাঁর অবদানে আজকে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং উন্নয়নের যৌথ আত্মনির্ভরশীলতা জোরদার হয় তাঁকে নিয়ে যে সকল ষড়যন্ত্র হচ্ছে সে বিষয়ে সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে সরব হওয়া দরকার। সেই সঙ্গে এর একটা স্থায়ী সমাধান করে ষড়যন্ত্রকারীদের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত। জিয়াউর রহমানকে অপমান ও তাঁর নাম দেশ থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে এ সরকার। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সার্ককে কার্যকর দেখে যেতে পারেননি। এর আগেই ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে একটা ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তিনি নিহত হন।
লেখক : প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান, মহাসচিব- ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

বইমেলায় চাঁদাবাজি : ঢাবি ছাত্রলীগের দুই নেতা বহিষ্কার

২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের সব জেলায় বিএনপির পদযাত্রা

নতুন পাঠ্যক্রমের ওপর জঙ্গি হামলা হয়েছে : শিক্ষামন্ত্রী

দেশে একনায়কতন্ত্র চলছে : জি এম কাদের

মাঠ পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকালে অবশ্যই অফিসে থাকতে হবে

লুটপাটের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা : মির্জা আব্বাস

তাড়াশে গুলিতে আ'লীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নিহত

সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বে না আওয়ামী লীগ : কাদের

ওয়ার্ন-ম্যাকগ্রাকে ছাড়িয়ে অ্যান্ডারসন-ব্রড

আ'লীগ এখন মলম পার্টিতে পরিনত হয়েছে : আলাল

বিএনপি রাজপথে থেকেই জনগনের অধিকার আদায় করবে : গয়েশ্বর

এই সরকারের পতন ছাড়া জনগণ ঘরে ফিরবেনা : টুকু

গাবতলীতে মরহুমা বিবি হায়াতুন নেছা তালুকদারের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

বিদেশী প্রভুদের কাছে বিএনপি নয়, সরকারই ধর্ণা দিচ্ছে : বুলু

এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে : আমীর খসরু

কর্ণেল আজিমের রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

অরাজনৈতিক হয়েও রাজনৈতিক হয়রানির শিকার ডা. জুবাইদা রহমান

এ প্রতিহিংসার শেষ কোথায়!

জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়ার মাতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ

বিনিয়োগকারীদের ২৪ হাজার কোটি টাকা লাপাত্তা

গুন্ডা-মাস্তান থেকে চেয়ারম্যান হয়েছি-শামিম (ভিডিওসহ)

গুন্ডা-মাস্তান থেকে চেয়ারম্যান হয়েছি-শামিম (ভিডিওসহ)

কণ্ঠে আহাজারি শুনি নাই, চোখে আগুন দেখেছি : মির্জা ফখরুল

ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নতুন নিয়োগ বিধিমালা নিয়ে অসন্তোষ

শিক্ষার টেকসই উন্নয়ন, প্রসার ও কর্মমুখীকরণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া ও বিএনপির ভূমিকা

ভোলা থেকে রাতের আঁধারে পালিয়ে এসেছিল এসআই কনক

রাজনীতিকে আওয়ামীকরণ

ধামরাইয়ে বাসা বাড়িতে দেহ ব্যাবসার অভিযোগ

ধামরাইয়ে যুবলীগ নেতা সহ ৬ ব্যাক্তির নামে আদালতে চাঁদাবাজী মামলা দায়ের
