মিরপুর রোডে চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৮ এএম, ২৯ নভেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৩৬ এএম, ২ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাজধানীর মিরপুর রোডে গাড়ির চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষায় আড়াই ঘণ্টার অভিযান চালিয়েছে। এ সময় বিচারপতি, পুলিশ, সিটি করপোরেশন, ব্যক্তিগত প্রাইভেট গাড়িসহ বেশ কিছু গণপরিবহন শনাক্ত হয়, যার চালকরা তাদের লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজ রবিবার বেলা ১২টা থেকে পৌনে তিনটা পর্যন্ত এই অভিযান চলে।
সময় দুপুর ১টা। মিরপুর রোডের রাপা প্লাজার সামনের সড়ক। মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন পুলিশের একজন কনস্টেবল। পুলিশের পোশাক পরা ওই মোটরসাইকেল আরোহীকে থামালেন ছাত্ররা। তার গাড়ি চালানোর লাইসেন্স দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারেননি পুলিশ সদস্যটি।
একই সময় ওই পথ অতিক্রম করতে যাওয়া একটি প্রাইভেটকার থামিয়ে লাইসেন্স দেখতে চান শিক্ষার্থীরা। জবাবে চালক জানান এটি বিচারপতির গাড়ি। তবে তিনি নাম বলতে রাজি হননি। লাইসেন্স না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, সেটি বাসায় রেখে এসেছেন। পরে গাড়ির চাবি দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেটকে দিয়ে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এর আগে বেলা ১২টার পরপর রাজধানীর মিরপুর রোডের ধানমন্ডি-২৭ নম্বর সড়কের মুখে আন্দোলনে নামে কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
নিরাপদ সড়ক ও গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে চলমান ছাত্র আন্দোলনের এ দিনে ছাত্ররা বেশ কিছু ব্যক্তিগত ও গণপরিবহন আটক করেন। এসব পরিবহনের মধ্যে বেশ কিছু পরিবহনের কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স না থাকায় সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্টদের সহযোগিতা নেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ ওই সব পরিবহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়।
আগামীকাল আবার একই স্থানে আন্দোলনে নামবেন শিক্ষার্থীরা- এমন ঘোষণা দিয়ে বেলা পৌনে তিনটার দিকে সড়ক ছাড়েন তারা।
আড়াই ঘণ্টার আন্দোলনে বিচারপতি, পুলিশ, সিটি করপোরেশন, ব্যক্তিগত প্রাইভেট গাড়িসহ বেশ কিছু গণপরিবহন শনাক্ত হয়, যেগুলোর বৈধ কাগজপত্র নেই এবং চালক লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
ধানমন্ডি ২৭ নম্বর এলাকায় দায়িত্বরত সার্জেন্ট হাবিবুর রহমানের দেয়া তথ্যমতে, ওই আড়াই ঘণ্টায় গাড়ির কাগজ ও লাইসেন্স না থাকায় তিনটি বাস, সিটি করপোরেশনের একটি জিপ, একটি প্রাইভেট কারকে জরিমানা করা হয়। পাঁচটি গাড়িতে জরিমানার অঙ্ক দাঁড়িয়েছে নয় হাজার ৪০০ টাকা।
একই স্থানে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট রিয়াদ মোরশেদ জানান, চালকের লাইসেন্স না থাকা এবং কাগজের মেয়াদ না থাকায় পাঁচটি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি বাস, মেঘনা কোম্পানির তেলবাহী লরি ও একটি ব্যক্তিগত গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
আন্দোলন শুরুর পর থেকে ছাত্রদের একটি অংশ যখন গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করছিলেন, একই সময়ে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে-বসে স্লোগান দেন। নিরাপদ সড়ক, বাসে অর্ধেক ভাড়ার দাবিসহ বেশ কিছু দাবি লেখা প্লাকার্ড দেখা যায় শিক্ষার্থীদের হাতে।
শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন- ‘হাফ পাস না দিলে, দেখি গাড়ি কেমনে চলে’; ‘আমরা ভাই মরল কেন প্রশাসন জবাব চাই’; ‘জেগেছেরে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘দাবি মোদের একটাই, নিরাপদ সড়ক চাই’।