স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন নিয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে আ'লীগের দু-গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৭ এএম, ২২ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৩৮ এএম, ৩ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি ডাঁশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু- গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত, বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের সান্দিয়ারা বাজার ও বশীগ্রাম ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে।
এলাকাবাসী জানান , দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর ও পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন মিঞা গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। সামান্য ইস্যুতেই উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে।
গত রোববার পান্টির ডাঁসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সুমন মিঞা গ্রুপের প্যানেল জয়ী হয় । এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনে বিজয়ী গোলাম নবী সোমবার সকালে সান্দিয়ারা বাজারে এসে জাফর গ্রুপের ডাঁসা এলাকার নেতৃত্বদানকারী মামুনের বাবা বীরমুক্তিযোদ্ধা শরিফুল ইসলাম দুলালকে কটুক্তি করে। এসময় মামুনের সমর্থকরা গোলাম নবীকে পিটিয়ে আহত করে। এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষের বিষয়ে মাইকেও ঘোষণা দেয়া হয় এবং উভয়পক্ষের মধ্যে সান্দিয়ারা বাজার ও বশীগ্রাম ব্রিজ এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাম দা, ঢাল, সুরকি, লাঠিসোটা, ইট পাটকেল নিয়ে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া, বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এসময় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরবর্তীতে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এবিষয়ে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন বলেন, রবিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আমার প্যানেল বিজয় লাভ করে। সোমবার সকালে বিজয়ী গোলাম নবী সান্দিয়ারা বাজারে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন মারপিট করে আহত করে। পরে দুপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে আমার গোলাম নবী, হৃদয়, হাসান, মহব্বত, টিপুসহ ১০ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জাহিদ হোসেন জাফর সমর্থিত মামুনের বাবা বীরমুক্তিযোদ্ধা শরিফুল ইসলাম দুলাল বলেন, সুমন মিঞার নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের কটুক্তি করে এবং রাম দা, ঢাল, সরকি, লাঠিসোটা, ইট পাটকেল নিয়ে আক্রমণ করে। এসময় প্রতিরোধ করতে গেলে আমাদের প্রায় ২০ জন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বেশকিছু ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষরা।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, 'স্কুল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের সমর্থকরা আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাববাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখনও দু পক্ষের কারো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।