গণতন্ত্র পুনঃ উদ্ধারে প্রয়োজনে আমাদের আরও একটি যুদ্ধ করতে হবে : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৮ এএম, ১০ জুন,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১১ এএম, ৫ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাজেট দেয়ার অধিকার আওয়ামী সরকারের নেই। এই আওয়ামী সরকার নিশিরাতে ভোট দিয়ে তারা ক্ষমতা দখল করেছে। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাদের নেতৃত্বে আবার কিসের বাজেট? তাদের কাছ থেকে জনগণের আকাঙ্খা কোন বাজেট আশা করা যায় না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির মিরপুর জোনের কাফরুল থানার ৪, ১৪, ১৬ ও ৯৪ নং ওয়ার্ড কমিটির সন্মেলন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। ঢাকা ১৪ আসনের গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এস এ সিদ্দিক সাজুর সার্বিক তত্বাবধানে অনুষ্ঠিত এ সন্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী সরকার দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রের স্তম্ভকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের শতকরা ৪২ % লোক আজ দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করছেন। দেশে শিক্ষার কোন মানদন্ড নেই। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের পথে।
তিনি বলেন, এই সরকার দেশের সাধারণ মানুষ এবং জনগণের জন্য কোন কাজ করছেন না। তারা তাদের নিজেদের পকেট এবং আখের গোছাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতি আজ খুব খারাপ সময় অতিক্রম করছেন। পুরো দেশ আজ আওয়ামী দুঃশাসনে নিমজ্জিত। দেশে আওয়ামী সরকারের লুটপাটের অপকর্মের রাজত্ব চলছে। আমাদের আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে এবং সেই যুদ্ধে অবশ্যই আমাদের জয়লাভ করতে হবে। গণতন্ত্র পুনঃ উদ্ধারের সেই আন্দোলনের জন্য সকলকে প্রস্তুত হতে হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের হাত থেকে পুরো জাতি কে রক্ষা করতে সে যুদ্ধে সকল নেতাকর্মীদের সামনে থেকে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য সবাই প্রস্তুত হোন।
বিশেষ অতিথি বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেন, জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এনে ছিলেন, আর বেগম খালেদা জিয়া ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই জন্যই এই আওয়ামী সরকার বিএনপিকে ভয় পায়।
আমান বলেন, ভোট চোর, ভোট ডাকাত এই আওয়ামী অবৈধ নিশিরাতের সরকারকে বিদায় করে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য সবাই কে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়তে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক বলেন, অনৈতিক অবৈধ সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়। আগামীতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। নইলে এই আওয়ামী সরকার কে কঠিন মূল্য দিতে হবে। তীব্র গণ আন্দোলনের মাধ্যমে রাজপথে থেকেই এই গণ দাবী আদায় করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ১৪ আসনের গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী এস এ সিদ্দিক সাজু বলেন, এ সন্মেলনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে স্বচ্ছতা উপায়ে নেতা নির্বাচন করার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন বিএনপি। আওয়ামী সরকার এ নির্বাচন দেখে তাদের বোধদয় হবে। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবার গণতন্ত্র চর্চায় তারা এগিয়ে আসবে। ইনশাআল্লাহ আগামীতে আমরা রাজপথে থেকে তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমেই এই অবৈধ আওয়ামী সরকার কে বিদায় করে দেশে গণতন্ত্রের সরকার কায়েম করব।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, আতিকুল ইসলাম মতিন, আতাউর রহমান (চেয়ারম্যান), মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, আক্তার হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, গত ঢাকা ১৪ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এস এ সিদ্দিক সাজু, এবিএম আব্দুর রাজ্জাক, গোলাম কিবরিয়া মাখন, আফাজ উদ্দিন, আলাউদ্দিন সরকার টিপু, হাজী ইউসুফ, হুমায়ুন কবির রওশন, অ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিন জসীম, এ রাজ্জাক, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা সাইদুল ইসলাম সাইদুল, রাজীব আহম্মেদ, ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ নাসির, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল হাসান রাজ, মিরপুর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজী দেলোয়ার হোসেন দুলু, দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ মৃধা, শাহ্আলী থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোলায়মান দেওয়ান, কাফরুল থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমান রাব্বী, ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোঃ সোহেল রহমান, দারুসসালাম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোঃ ইকবাল মাহমুদ রিপন, মিরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কেএম ইয়াহিয়া সামী, ১২ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ রুবেল, দারুসসালাম থানা ছাত্রদলের রুমন আহম্মেদ, মিরপুর থানা ছাত্রদলের মেহেদী, সহ ওয়ার্ড থেকে আগত কাউন্সিলরবৃন্দ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকবৃন্দ।
সন্মেলনে ওয়ার্ড আহবায়ক কমিটির সদস্যগণ ব্যালটের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচিত করেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ৮ টি সাংগঠনিক জোনের ২৬ টি থানাধীন ৭১ টি ওয়ার্ডের সন্মেলন গত ১ লা জুন শুরু হয়ে আগামী ২৫ শে জুন পর্যন্ত চলবে। ধারাবাহিক এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ৯ই জুন কাফরুল থানার ৪,১৪,১৬,৯৪ নং ওয়ার্ডের সন্মেলনের মাধ্যমে মিরপুর জোনের সকল ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ হয়েছে।