জিয়া পরিবার প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার : এমরান সালেহ প্রিন্স
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৬ এএম, ২৫ জুন,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:০৪ এএম, ১১ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, জিয়া পরিবার প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। যিনি স্বেচ্ছায় নির্বাসনে থেকে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে রাজনীতি করেছিলেন, তার মুখে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সমালোচনা শোভা পায় না।
আজ শুক্রবার এমরান সালেহ প্রিন্স ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ঊপজেলার ধারা বাজারে বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ভান্ডারের জন্য জনগণের কাছ থেকে ত্রাণ সহায়তা সংগ্রহকালে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন।
এর আগে তার নেতৃত্বে বিএনপি নেতৃবৃন্দ ধারা বাজারে বিএনপির ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। লিফলেট বিতরণকালেও বাজারের ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতা, রিক্সা চালক, দিনমজুর, মহিলা, ছাত্র, যুবক, শিক্ষক, ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ নগদ অর্থ, চাল, ডাল, তেল, চিনি, লবন, শিশু খাদ্য, শিশু পোষাক, শাড়ী, লুঙ্গী, পাতিল, প্লেট, মোমবাতি, দিয়াশলাই, খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলপটসহ বিভিন্ন সামগ্রী এমরান সালেহ প্রিন্সের কাছে প্রদান করেন। নগদ অর্থ বিকাশের মাধ্যমে সরাসরি বিএনপির ত্রাণ তহবিলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে ধারা বাজারে ইব্রাহিম মার্কেটে সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও জনসাধারণের বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশেও উপস্থিত নেতাকর্মী ও জনসাধারণ বিএনপির তহবিলে অর্থ সহ ত্রাণ সামগ্রী এমরান সালেহ প্রিন্স এর কাছে প্রদান করেন।
সমাবেশে তিনি বলেন, ভয়াবহ বন্যায় ও লাগামহীন দ্রব্যমূল্যে মানুষ দিশেহারা আর আওয়ামী সরকার উৎসবে মাতোয়ারা। বন্যার্তসহ সকল মানুষের চরম দূর্ভোগের সময় সেতু উদ্বোধনের নামে আতশবাজি, আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিকসহ উৎসব আয়োজন করে সরকার অমানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে। দুর্ভোগের শিকার দূর্দশাগ্রস্ত মানুষের সাথে এসব উপহাস ছাড়া কিছুই নয়।
সরকার সেতু দেখিয়ে,উৎসব করে তাদের দূর্নীতি, দূঃশাসন, ভোট চুরি, জন অধিকার হরণ আড়াল করতে ব্যর্থ চেস্টা করছে। পদ্মা সেতু নির্মাণেও তারা জনগণের টাকা লুটপাট করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল। বন্যার্তদের জন্য সহানুভূতিশীল ব্যাক্তিদের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে বিএনপি দুর্গত মানুষের মাঝে তা বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও দলের ত্রাণ তহবিলে সাধ্য মত সহায়তা প্রদান করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখন উৎসবের নামে জনগণের সাথে উপহাস করছে, বিএনপি তখন জীবনবাজী রেখে দুর্গত নিরন্ন মানুষের কাছে খাদ্য, ত্রাণ পৌছে দিচ্ছে, নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনছে। বন্যার পানি নেমে গেলে কৃষি পূনর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্ত ঘর বাড়ি পূনঃনির্মান কর্মসূচীও হাতে নেবে।
তিনি বলেন, সরকারের ত্রাণ তৎপরতা ফটো সেশনে সীমাবদ্ধ। খাতায় আছে বাস্তবে নেই। তাদের সকল বরাদ্দ, ফোকাস সেতু উদ্বোধনের নামে উৎসব আয়োজনে।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দলের নেতাকর্মীদের প্রতি বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন ,ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের ত্রাণ কার্যক্রম প্রতক্ষ ভাবে তদারকি ও পরিচালনা করছেন। দলের নেতাকর্মীরা সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম সীমিত করে অর্ধাহারে, অনাহারে থেকে দিনরাত বন্যা দুর্গত মানুষকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগ-মহামারীতে বিএনপি জনগণের পাশে থাকে। করোনা পরিস্থিতিতেও বিএনপি কর্মহীন অসহায় মানুষকে খাদ্য ও অর্থ এবং অক্সিজেন-ঔষধসহ চিকিৎসা সহায়তা করেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে লুটপাট, দুর্নীতি করেছে।
এমরান সালেহ প্রিন্স বিএনপির ত্রাণ তৎপরতায় সহযোগিতার জন্য জনসাধারণ ও নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানান।
ধারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ত্রাণ সংগ্রহের এই অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার , ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য, হাফেজ আজিজুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, আব্দুল হাই, নাদিম আহমেদ, আবু হাসনাত বদরুল কবির, আরফান আলী, আলী আশরাফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজিম উদ্দিন, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা হোসনে আরা নীলু, সহ সভাপতি ও হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনোয়ারা বেগম ময়না, উত্তর জেলা যুব দলের সহ সভাপতি আবুল আজিজ খান, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল মালেক, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি আসাদুজ্জামান আসিফ, উত্তর জেলা জাসাস সহ সভাপতি রাব্বি আরাফাত, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি শামসুল হক, জাসাস কেন্দ্রীয় নেতা দিদার মন্ডল, হালুয়াঘাট উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান, শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল গণি, সাধারণ সম্পাদক মশিউজ্জামান, ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাইমুর আরেফিন পাপন, পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব তাজবীর হোসেন অন্তর, স্বেচ্ছাসেবক দলের উপজেলা আহ্বায়ক রুহুল আমিন খান, সদস্য সচিব আলিমুল ইসলাম, পৌর আহ্বায়ক মেহেদী হাসান দুলাল, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান সুজন, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আকিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব আলী আজগর, মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে তিনি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর অশালীন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, যিনি সুন্দর ও নির্ভুল সাবলীলভাবে উর্দু গানের কলি উচ্চারণ করতে পারেন, তার অন্তরেই পাকিস্তান। কথায় কথায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অসত্য বিষোদগার করা প্রধানমন্ত্রী সুলভ আচরণ নয়। দূর্নীতি, দুঃশাসন, ভোটাধিকার হরণের কাহিনী বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে জনগণের দৃস্টি সরাতে চায় সরকার।
দেশ, রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে তারেক রহমানকে দূরে রাখতে একের পর এক মিথ্যা মামলা ও ফরমায়েশী রায় দিয়ে চরম প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে এখন বিভ্রান্তিকর অসত্য বক্তব্য দিচ্ছেন। তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন নাই। লন্ডনে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এবং একের পর এক ফরমায়েসী রায়ের কারণে বাংলাদেশে তাঁর অবস্থান নিরাপদ নয়। ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে রাজনীতি করতে পারলে তারেক রহমান কেনো পারবেন না। সে সময়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনও মামলা বা রায় হয় নাই বা ছিলো না। বর্তমান সরকার তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে ফরমায়েসী রায় দিচ্ছে, বাংলাদেশ তাঁর জন্য চরম অনিরাপদ করে ফেলেছে ফ্যাসিবাদী সরকার। সেজন্য বিএনপির নেতাকর্মীরাই তাঁকে দেশে আসতে নিষেধ করেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এতটাই মানবিক, রাজনৈতিক ও উদার ছিলেন, যে তিনি শেখ হাসিনাকে স্ব সম্মানে দেশে ফিরে অনায়াসে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন, প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করেন নাই, রাজনীতি দুয়ে মোকাবিলা করতে চেয়েছিলেন বলেই শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরেয়ে এনেছিলেন। যদিও আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সেই কৃতজ্ঞতাবোধ নাই। আর শেখ হাসিনা তারেক রহমানকে ভয় পায় বলে তাঁর দেশে ফেরার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করে চলেছে।