সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণেই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে : এনপিপি

‘সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণেই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে’ এমন মন্তব্য করে ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি-এনপিপির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ ছালাউদ্দিন ছালু বলেছেন, বর্তমানে দেশ চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আজ আমরা মানববন্ধনের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দাঁড়িয়েছি। সীমাহীন লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করছে পর্দার আড়ালে থাকা কিছু ব্যক্তি। যার একজন হল জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। তিনি কুইক রেন্টালের তত্ত্ব আবিষ্কার করেছেন। ২০১০ সালের প্রেক্ষিতে কুইক রেন্টাল দরকার ছিলো এবং সেই চুক্তি ছিল ৩ বছরের জন্য কিন্তু সেই চুক্তি এখনো বর্তমানে আছে। আরো নতুন নতুন কুইক রেন্টালের অনুমতি দেয়া হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা সরকার প্রদান করেছে। এই ৭৫ হাজার কোটি টাকা দশটি কোম্পানিকে প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কোম্পাানিকে ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রদান করেছে যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। জনগণের কষ্টে অর্জিত টাকা এই পর্দার আড়ালে থাকা তৌফিক-ই-ইলাহী সাহেবেরা এ কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে লুটপাট ও দুর্নীতি করেছে। এর বিচার হওয়া দরকার।

আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি-এনপিপি ও এর নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-এনডিএফের  উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল তিনি এসব কথা বলেন। মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাব থেকে হাইকোর্ট মোড় হয়ে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

সভাপতির বক্তব্যে শেখ ছালাউদ্দিন ছালু বলেন, বর্তমানে প্রতিটি দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশচুম্বি, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত জনগণ অতিষ্ঠ। জ্বালানি তেল এমন একটি পণ্য যার প্রভাব প্রতিটি পণ্যের ওপর পড়বে। ভাড়া নৈরাজ্যের চাপে মধ্যবিত্ত মানুষগুলো আজ অসহায়। সারাদেশে আওয়ামী-লীগের বড় বড় নেতারা ও শিল্পপতিরা এবং সরকারি আমলারা গোপনে ডলার কিনে জমা রাখছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে এখন ডলারের সংকট। এখন ৯৫ টাকার ডলার ১১৫ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ বিদেশে চিকিৎসার জন্য ডলার পাচ্ছে না। তাই এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য দাবি করছি। এত দিন বলেছেন ডলারের কোনো সংকট নেই বাংলাদেশে, শ্রীলঙ্কার মত হবে না। এখন আইএমএফের প্রেসক্রিপসন অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করেছেন এবং আইএমএফের কাছে লোন পাওয়ার জন্য ছোটাছুটি করছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে এনপিপির চেয়ারম্যান বলেন, আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং আমরা জানি আপনি সৎ মানুষ, কিন্তু বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে যারা দুর্নীতি করেছে তাদের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং অনতিবিলম্বে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি।

এনপিপি চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা কাজী ছাব্বীরের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন এনপিপির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল হাই মন্ডল, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)’র সভাপতি এ কে এম মহিউদ্দিন আহাম্মেদ (বাবলু), ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই সরকার, এনপিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ আবুল কালাম, মোহাম্মদ আনিসুর রহমান দেওয়ান প্রমুখ।