রুমিন ফারহানা আসার আগেই বিজয় মেলার মঞ্চ ভেঙ্গে দিল প্রশাসন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৩২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:০৮ পিএম, ৬ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বিজয় মেলার আলোচনা সভায় ব্যরিস্টার রুমিন ফারহানাসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করার কর্মসূচি থাকায় বিজয় মেলার মঞ্চ ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রশাসনের নির্দেশে মেলা কর্তৃপক্ষ আলোচনা সভার মঞ্চ ভেঙ্গে ফেলতে বাধ্য হয়।
উল্লেখ্য প্রতি বছরের মত উপজেলার প্রধান সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বিত সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র স্থানীয় সরকারি শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র মাঠে মহান বিজয়ের মাস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ দিন ব্যাপি এ বিজয় মেলার আয়োজন করে। ১৬ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী এমপি মেলাটির উদ্বোধন করেন। মেলার দ্বিতীয় দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ বক্তৃতা করার কথা থাকলেও তারা উপস্থিত হননি। তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি, চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, পঞ্চম দিনে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপিসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং ষষ্ঠ দিনে আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।
মেলার সপ্তম দিন বৃহস্পতিবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা ফজলুর রহমান ও সাবেক এমপি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ সম্পাদক ব্যরিস্টার রুমিন ফারহানাসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ আলোচনা করার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যরিস্টার রুমিন ফারহানাসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের বিজয়মঞ্চে বক্তৃতা করার ব্যাপারে আপত্তি তোলা হয়। ফলে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রশাসনের নির্দেশে মেলা কর্তৃপক্ষ মঞ্চ ভেঙ্গে ফেলতে বাধ্য হয়।
তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা যায়, বিগত ১৯৯৪ সাল থেকে আশুগঞ্জে স্থানীয় সরকারি শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র মাঠে ঐতিহ্যবাহী এ বিজয় মেলার আয়োজন করে আসছে। শুরু থেকেই প্রতিবছর উক্ত মেলার মঞ্চে দিন ওয়ারি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়াকার্স পার্টি, কমিউনিস্ট পাটি ও জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, দেশের খ্যাতনাম কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীগণ উন্মোক্ত আলোচনা করে আসছে। আলোচনা সভার পাশাপাশি প্রতিদিন মেলার মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক ও মনোজ্ঞ সংগীতানুষ্ঠান পরিবেশিত হয়ে থাকে।
অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও উক্ত মেলায় আওয়ামী লীগ বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে ১০ দিন ব্যাপি মেলার দিন ওয়ারি কর্মসূচি সাজানো হয়। পরে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মেলার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু বিএনপির আলোচনা সভা নিয়ে বিপত্তি দেখা দেয় ।
সমন্বিত সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের সভাপতি প্রফেসর শরীফুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক লিটন মোল্লা জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিএনপির প্রোগ্রামে পলাতক আসামী থাকা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা বলে আলোচনা সভার মঞ্চ ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেয়া হলে আমরা মঞ্চ ভেঙ্গে ফেলি।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এমন আশঙ্কায় ঊর্ধ্বত কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মেলার আলোচনা সভার মঞ্চটি খুলে ফেলতে বলা হয়েছে। যথারীতি মেলার রকমারি স্টলগুলি নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত চলবে।