আমতলী ও তালতলীর সড়কের ১২ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ ॥ দুই লক্ষ মানুষের দূর্ভোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৯ এএম, ৬ জুলাই,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৪২ এএম, ২০ জানুয়ারী,সোমবার,২০২৫
বরগুনার আমতলী ও তালতলীর সড়কের ১২ কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরে মিনি পুকুরে পরিনত হয়েছে। হাজারো খানাখন্দের সড়কে দুই উপজেলার অন্ততঃ দুই লক্ষ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত এক বছর ধরে সড়কে ভারী যানবাহন ও পরিবহন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানাগেছে, ১৯৮৮ সালে তালতলী উপজেলা শহরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম তালতলী সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেন আমতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। মানিকঝুড়ি থেকে সোনাকাটা পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার সড়ক। ওই বছর মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়ক স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ নির্মাণ করে। ২০০৩ সালে কচুপাত্রা থেকে সোনাকাটা পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার সড়ক হেরিনবন করা হয়। ২০০৮ সালে ওই সড়কটি পাকাকরণ করা হয়। ভেঙ্গে যাওয়ায় ২০১৬ সালে ওই সড়কটি সংস্কার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে সড়ক সংস্কারে ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করে। এতে সড়ক সংস্কারের তিন বছরের মাথায় ওই সড়কটি খানাখন্দে পরিনত হয়। এদিকে মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা সড়কটি ২০১৯ সালে সংস্কার করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। সড়ক সংস্কারের এক বছরের মাথায় ১২ কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরে ঢোবায় পরিণত হয়। বর্তমানে সড়কটি বেহাল দশায় পড়ে আছে। বৃষ্টি এলেই সড়কের খানাখন্দ পানি জমে মিনি পুকুরে পরিনত হয়। ওই সড়ক দিয়ে আমতলী ও তালতলী উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ, ঢাকা ও তালতলীগামী পরিবহন বাস, তালতলী আইসোটেক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাভার ভ্যান, ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাহেন্দ্র, ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও মোটর সাইকেলসহ সহস্রাধিক গাড়ী চলাচল করে। এতে দূর্ভোগে পরেছে দুই উপজেলার দুই লক্ষাধীক মানুষ ও যানবাহন। সড়ক দিয়ে চলাচল করতে মানুষের সীমাহীন দুূর্ভাগ পোহাতে হচ্ছে। বেহাল সড়কের কারনে গত এক বছর ধরে পরিবহন গাড়ী চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, গত দুই বছর ধরে সড়কটি সংস্কারের ছাড়া অভিভাবকহীন অবস্থায় পড়ে আছে। কেউ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না। দ্রুত সড়ক সংস্কার করে চলাচলের পথ সুগম করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা বীজ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের প্রতি ১০ মিটার অন্ততঃ বড় বড় খানাখন্দে পরিপূর্ণ। গর্তে পানি জমে ডোবায় পরিনত হয়েছে। অনেক স্থানে ছোট গাড়ী আটকে যাচ্ছে। হাজারো খানাখন্দে ভরে গেছে সড়কটি। সড়ক নয় যেন মিনি পুকুর। প্রায়ই সড়কে দূর্ঘটনা হচ্ছে। খানাখন্দে ভয়ে সড়কটি মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। গত দুই বছর ধরে সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ মাহবুবুর বহমান জাফর বিশ্বাস বলেন, দুই বছর ধরে সড়ক সংস্কার কাজ বন্ধ। এতে দূর্ভোগে পরেছে দুই উপজেলার অন্ততঃ দুই লক্ষ মানুষ। মানুষের দূর্ভোগের শেষ নেই। সড়কে হাজারো খানাখন্দ। দ্রুত সড়ক সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের পথ সুগম করার দাবী জানান তিনি।
তারিকাটা গ্রামের জসিম উদ্দিন মৃধা বলেন, সড়ক নয় যেন মরণ ফাঁদ। সব কিছুর উন্নয়ন হলেও এই সড়কের কোন উন্নয়ন নেই। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী জানাই।
একই গ্রামের কৃষক সোবাহান ও শহিদ বলেন, মোরা আর কি কমু? মোনে হয় মোরা এই দ্যাশের মানু না। এমপি, চেয়ারম্যান ও মেম্বর সবার সব চলে মোগো রাস্তার কাম চলে না। মোরা যে কত কষ্ট হরি হ্যা আল্লাই জানে। মোগো রাস্তাডারে একটু পাহা হইর্যা দেন।
বাস গাড়ী চালক মিজানুর রহমান ও মজিবুর রহমান বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারনে গত এক বছর ধরে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবী জানাই।
তালতলী উপজেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম পাটোয়ারী বলেন, সড়কে নয় যেন মিনি পুকুর। ১২ কিলোমিটার সড়কে অন্ততঃ ৫০ টি স্থানে মিনি পুকুরে পরিনত হয়েছে। অভিভাবকহীন এ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবী জানাই।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সড়ক সংস্কারের জন্য বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে প্রকল্প জমা দিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করবো।
বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফোরকান খাঁন বলেন, সড়কের প্রাক্কলন তৈরি করে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।