ওমানে যাওয়া হলোনা গৃহবধু শিখার, পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩৯ পিএম, ২৫ জুন,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:২২ পিএম, ৭ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
গৃহবধু শিখা খাতুন (২৮) কে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ওমানে স্বামীর কাছে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে শিখার শশুর আব্দুল মালেক ও শাশুড়ি ফরিদা বেগমের ইন্ধনে এলাকার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিযনের পাইকপাড়া গ্রামে।
এ ব্যাপারে শিখার পিতা চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর উপজেলার মর্তুজাপুর গ্রামের মহর আলী ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, শিখার স্বামী সাইফুল ইসলাম ওমান প্রবাসি। স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান সিয়ামকে কাছে নেওয়ার জন্য সাইফুল সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। গত ৩ জুন ছিল শিখার ফ্লাইট। কিন্তু তার আগেই শিখা হত্যাকান্ডের শিকার হন। গত ২৭ মে গভীর রাতে শিখাককে হত্যা করা হয়। মামলাটি হাটগোপালপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আহছানুর রহমান তদন্ত করছেন বলে বাদী জানান।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০০৭ সালে সাইফুল ইসলামের সাথে শিখার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে সিয়াম নামের এক পুত্র সন্তানের রয়েছে। বেশ সুখেই দিন কাটছিল তাদের জীবন। সংসারের স্বচ্ছলতার জন্য সাইফুল স্ত্রী-সন্তান রেখে ওমানে যায়। সেখানে ১০ বছর থাকার পর স্ত্রীকে নিজের কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু শশুর-শাশুড়ি সহ অন্যান্যরা বাধা হয়ে দাড়ায়। পরিকল্পনা আটতে থাকে কিভাবে বিদেশ যাওয়া আটকানো যায়। গত ২৭ মে রাত আনুমানিক ২ টার দিকে একদল সন্ত্রাসীসহ শিখার বসত ঘরে আক্রমন চালায় তার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি। গোপালপুর এলাকার রং মিস্ত্রি জনৈক সুজনের সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে শিখাকে ব্যাপক নির্যাতন করে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করা হয়। শিখা দাবীর টাকা দিতে অস্বীকার করায় আবারও তাকে এলাপাতাড়ি মারধর করে ফেলে রেখে যায়। প্রতিবেশিরা তাকে মূমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেলে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়। পরে তাকে রিলায়েন্স জেনারেল হাসপাতালে নেয়া ভর্তি করা হলে গত ৩০ মে ইন্তেকাল করেন।
এ ঘটনায় শিখার পিতা বাদী হলে পাইকপাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে হৃদয় (২৩), তোরাপ আলীর ছেলে সজীব (৩০), ঝন্টুর স্ত্রী মধু খাতুন (৩৪), জহর শেখের ছেলে রাসেল (৩০), মসলেম মিয়ার ছেলে সাদ্দাম (৩০), কছিম সর্দারের ছেলে লিখন (২৫), মৃত সুলতান বিশ্বাসের ছেলে রানা (৩০), মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে কামরুল (৩০), সাধুহাটি গ্রামের ইউসুফ মোল্লার স্ত্রী তারজিনা খাতুন (৪০) এবং হাটগোপালপুর এলাকার রাজমিস্ত্রি সুজন (২৫) কে আসামী করে মামলা করেছেন।
নিহত শিখার মামা শরিফুল জানান, খবর পেয়ে আমারা ঘটনার দিন রাতেই কিভাবে শিখাকে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তা জানতে পারি। এখন তারা আমাদেরকে মামলা তুলে নিতে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। অথচ আসামীদের একজনকেও গ্রেফতার করতে পারিনি পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আহছানুর রহমান জানান, আমরা আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তারা সকলেই গা ঢাকা দিয়ে আছে। তিনি বলেন, শিখা নির্যাতনের পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে হাসপাতালে মারা যান।