

শাহাদাতের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ হাস্যকর, উনি রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের শিকার - আইনজীবী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩১ এএম, ৩ এপ্রিল,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১২ এএম, ২৭ নভেম্বর,সোমবার,২০২৩

চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেছেন তার অইনজীবী। তার দাবি পুলিশ কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা হওয়ার সাথে সাথে তাকে গ্রেফতার করাও রহস্যজনক। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগও হাস্যকর।
ডা. শাহাদাত হোসেনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করে ডা. লুসি খান মামলা দায়ের করেছেন। মুজাফফর আহমেদ এবং তিন নম্বর আসামি ফাতেমা জহুরা, যিনি মুজাফফরের স্ত্রী। বলা হয়েছে, শাহাদাত হোসেনের নির্দেশে জনৈক ডা. লুসি খানের মহাসচিবকে অপহরণ করা হয়েছে এবং চাঁদা দাবি করা হয়েছে। বাদী লুসি খান মামলায় বলছেন, গত ২০ মার্চ উনার এনজিওর অফিসে গিয়ে উনার সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়েছে এবং চাঁদা দাবি করা হয়েছে। মুজাফফর আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ২০ বছর ধরে সৌদি প্রবাসী একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। তার স্ত্রী ২০২০ সালে করোনা শুরুর আগে বাংলাদেশে আসেন এবং ১১ মার্চ ২০২১ সাল থেকে মুজাফ্ফর আহমদ সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। চাঁদা দাবি এবং অপহরণের কথা বলা হচ্ছে, যে লোক বাংলাদেশে নেই তার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক হয়রানি এবং একজন শিক্ষিত লোকের চরিত্রহনন বিরোধী দল করলে বাংলাদেশে এখন কতটা সহজ হয়ে গেছে, সেটাই এ মামলায় প্রমাণ।
অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, চকবাজার থানার এজাহার অনুযায়ী লুসি খানের সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ এখনও নিখোঁজ। কিন্তু এই মহিউদ্দিনের সাথে লুসি খান প্রতিদিন তার ফিরিঙ্গী বাজারের ঘর থেকে বের হচ্ছেন, গত ২২ মার্চ থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আছে, ছবি ও সিডি আমাদের কাছে আছে। যদি কারো এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা দিতে পারব। এই চাঁদাবাজির নাটকটা কেন করা হলো প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, শাহাদাত হোসেনকে কেন জড়ানো হল? আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, একটা রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হবে, আর তার আগেই থানায় গিয়ে লুসি খান এজাহার লেখা শুরু করলেন। এজাহার লেখার সময় মামলার আসামিরা কে কোথায় সেটা জানেন না বাদী ? কিন্তু পুলিশ ডা. শাহাদাতকে ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল থেকে আটক করেছে, যা মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু তাকে রাখা হয়েছে মনসুরাবাদ ডিবি অফিসে এবং চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কোতোয়ালি থানায় যে দুইটা মামলা হয়েছে, সেখানে বলা হল ডা. শাহাদাত পলাতক। তাকে এরেস্ট করল ডিবি, অথচ আদালতে পাঠানো ফরোয়ার্ডিংয়ে বলা হল তিনি পলাতক।
কোতোয়ালি থানার দুই মামলার ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে, একটি সার্কিট হাউজের সামনে, আরেকটি নাসিমন ভবনের সামনে। একই লোক একবার সার্কিট হাউজে, আরেকবার নাসিমন ভবনের সামনে উপস্থিতি একই সময়ে দেখাচ্ছে? আবার গ্রেফতার করা হয়েছে একই সময়ে ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল থেকে। এটা কিভাবে সম্ভব হয় প্রশ্ন তুলেন এ আইনজীবী ?
তিনি আরো বলেন, লুসি খানের মামলায় ডা. শাহাদাত হোসেনকে জড়ানো হল কেন বা পুলিশ তাকে নিয়ে খেলার সুযোগ পেল কিভাবে ? মুজাফফর এবং ফাতেমা জোহরার স্থায়ী ঠিকানা হচ্ছে চন্দনাইশ উপজেলা। ডা. শাহাদাতের গ্রামের বাড়িও চন্দনাইশে। দু’জনের কাছ থেকে লুসি খান ২০২১ সালের ৯ মার্চ তিন কোটি টাকার একটি জায়গা নিয়েছেন ফাতেমা জোহরার কাছ থেকে। চার আনা পয়সাও ওই মহিলাকে লুসি খান দেননি। রেজিস্ট্রি দলিলের নম্বর ৭৬১/২১। এক টাকাও প্রবাসী এবং তার স্ত্রীকে না দিয়ে ইনিয়ে-বিনিয়ে তার কাছ থেকে জায়গাটা হাতিয়ে নিয়েছেন লুসি খান। এই প্রবাসী দম্পতি প্রাপ্য টাকার জন্য বিভিন্নজনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাদেরকে অনেকে পরামর্শ দিয়েছেন যে আপনারা চন্দনাইশে বাড়ি হিসেবে ডা. শাহাদাতের সহযোগিতা নেন। শাহাদাত হোসেন মানবীয় গুণাবলির অধিকারী এবং জনদরদী মানুষ বিধায় লুসি খানকে বলেন যে, আপনি তাদের পাওনা দিয়ে দেন। মানবতার সেবায় তিনি এ কাজ করেছেন। রোগী দেখা অবস্থায় কাউকে যদি গ্রেফতার হতে হয়, তাহলে সমাজে কেউ কাউকে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসবে না। তিনি আরো বলেন, ২০ মার্চ থেকে অপহৃত ব্যক্তি প্রতিদিন শহরে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছেন। প্রতিটি মামলা দায়েরের আগে পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত করে। কিন্তু কিভাবে বা কাদের ইশারায় কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই অভিযোগকে মামলা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেটা এখন চট্টগ্রামবাসীর মনে প্রশ্ন জেগেছে। এ থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে রাজনৈতিক শত্রুপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে মেয়র নির্বাচনে সৃষ্ট ইমেজ ধ্বংস করার জন্য মামলাটি করেছেন লুসি খান।