চাঁদা না পেয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা অস্ত্র দিয়ে জিম্মি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে লুটপাট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৮ এএম, ১৭ এপ্রিল,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৪০ এএম, ৭ অক্টোবর,সোমবার,২০২৪
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা ছাত্রলীগের ২০-২২ জনের একটি দল পাটুরিয়া ফেরি ঘাট এলাকায় সড়ক উন্নয়ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদার টাকা না দেয়ায় প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত অন্তত ২৫ লাখ টাকার দুইটি ভেকু ভাঙচুর করে উপজেলা ছাত্রলীগের ওই নেতৃবৃন্দ। এরা সবাই উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী বলে স্থানীয়দের দাবি করেন। এছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনডিই কোম্পানীর ব্যবস্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপক ও স্টোর ম্যানেজারকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জিম্মি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে কোম্পানীর ২ লাখ ২২ হাজার টাকা লুটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় সাব-কোম্পানী এমএম এন্টারপ্রাইজ প্রোপ্রাইটার মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে গেল বুধবার রাতে ৯ জনকে আসামি করে শিবালয় থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার দায়ের পর থেকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আমিনুল ইসলাম।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-পাটুরিয়া সড়ক ফোর লাইন কাজ চলছিল। এই কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনডিই। প্রতিষ্ঠানের কাছে বালু ভরাটের সাব কন্ট্রাক নিয়ে এমএম এন্টারপ্রাইজ কাজ করে আসছিল। ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে বেশ কিছু দিন ধরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতা ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে চলতি মাসের ১২ তারিখে রাত ১১টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটের ট্রাক টার্মিনাল এনডিই কোম্পানির ম্যানেজার আইনাল হক, এমএম এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার আলমগীর হোসেন, কোম্পানির কর্মরত রাজিব, ভেকু ড্রাইভার মতিনসহ বেশ কয়েকজনের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এসময় এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও মো. নাঈম, মতিন, আনিছুর রহমান, আরিফ, ইকবাল, ইসমাইলসহ অন্তত ২০-২২ জনের একটি দল তাদের মারধর করে এবং দুটি ভেকু ভাঙচুর করে। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ মালামাল ছিনিয়ে নেয়। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায়। মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম জানান, আমাদের কাছে বেশ কিছু দিন ধরে ওই চক্রটি ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা আমাকেসহ কোম্পানীর অন্য লোকদের মারধর করে দুইলক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। প্রথম দিকে ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস পাইনি। পরে সবার সাথে আলোচনা করে ১৪ এপ্রিল রাতে থানায় মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমি চরম ভয় ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। যে কোন সময় আমার ওপর হামলা হতে পারে। শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবীর জানান, এ ঘটনায় আমিনুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।