বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষ, মামলা-২, আসামি-৩৫০০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ১৮ এপ্রিল,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৪৭ পিএম, ১৮ জানুয়ারী,শনিবার,২০২৫
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
গতকাল শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে এ মামলা দুটি করা হয়। বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দুটি মামলার একটি পুলিশের পক্ষ থেকে আরেকটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতপরিচয় সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।’
গতকাল শনিবার সকালে বাঁশখালীর গন্ডামারায় সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। এদিকে গুলিতে আহত অন্তত ৩০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত পাঁচজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রয়েছে।
অন্যদিকে, গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, রমজান মাসে শ্রমঘণ্টা ১২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ১০ ঘণ্টা করা এবং মার্চ মাসের বেতন প্রদানসহ প্রতিমাসের ৫ তারিখে বেতন প্রদানের দাবিতে গত শুক্রবার থেকে ক্ষোভ জানিয়ে আসছিলেন শ্রমিকরা।
এ নিয়ে গতকাল সকালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমন্বয়কারী মো. হাদিলের সঙ্গে শ্রমিকদের আলোচনা চলাকালে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পুলিশ এসে বাধা দেয়। এ সময় কয়েকজন বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়।
এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি চালালে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই ঐ পাঁচ শ্রমিক প্রাণ হারান। এছাড়া আহত হন আরও অর্ধশতাধিক শ্রমিক। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে শ্রমিক হতাহতের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিল্পগ্রুপ এস আলমের মালিকানায় এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে এই বিদ্যুকেন্দ্রটি নির্মাণ হচ্ছে। একটি চীনা কোম্পানি এখানে অর্থায়ন করেছে। বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী জানান, এস আলম গ্রুপ ক্ষতিপূরণের টাকা ও হতাহতদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল এই বিদ্যুকেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে চার জন নিহত হয়েছিল। এর কিছুদিন পর আবারও সংঘর্ষের ঘটনায় আরও এক জন নিহত হন।