হোটেলের স্বেচ্ছাচারিতা : কোয়ারেন্টিনে না রেখেই টাকার বিনিময়ে ছাড়পত্র
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৬ এএম, ৫ মে,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১০:০১ পিএম, ৮ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২৫
কোয়ারেন্টিনে না রেখেই টাকার বিনিময়ে ছাড়পত্র দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর মনোনীত কয়েকটি হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আবার কোয়ারেন্টিনের জন্য বিদেশ থেকে অনলাইনে টাকা পরিশোধ করলেও ঢাকায় নেমে আবার টাকা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রবাসীদের অভিযোগ, কোয়ারেন্টিনের জন্য হোটেল ব্যবস্থাপনার নামে চলছে স্বেচ্ছাচারিতা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাতার ফেরত প্রবাসীরা। তাদের বুকিং করা হোটেলের প্রতিনিধি খুঁজে পাননি অনেকেই। ফোন করেও সাড়া মেলেনি।
বিদেশফেরত এ সকল মানুষ জানান, হোটেল থেকে কেউ নিতে আসেননি। বাধ্য হয়ে হাজী ক্যাম্পে যাচ্ছি। হোটেলের বুকিং ছিলো। পরে বাধ্য হয়েই সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ ক্যাম্পে যেতে হয় তাদের। গত কিছুদিন ধরেই এমনভাবে প্রতারিত হচ্ছেন প্রবাসীরা। হোটেলের টাকা অনলাইনে পরিশোধ করে আসলেও ঢাকায় নেমে আবার টাকা দিতে হচ্ছে, এমন অভিযোগ মিলছে অহরহ। আনোয়ার, শিপন এবং মাসুদ তিন সহকর্মী সৌদি থেকে ঢাকায় আসেন ২৯ এপ্রিল রাতে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্ধারিত ছিল উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরে মনসুন ইন হোটেল। কিন্তু কোয়ারেন্টিনে না থেকে জনপ্রতি ৭ হাজার টাকা করে দিয়ে হোটেলের ছাড়পত্র নেন, চলে যান গ্রামের বাড়িতে। সৌদি প্রবাসী আনোয়ার জানান, আমাকে বলে সাড়ে তিন হাজার টাকা দেন তবে বুকিং বানিয়ে আপানে ছাড়পত্র দিয়ে দিব।
সৌদি প্রবাসী মাসুদ বলেন, আগে অনলাইনে টাকা দিয়েছি এখানে আসার পর আরও সাড়ে সাত হাজার টাকা দিয়েছি। আর পরিস্থিতি যেমন ছিলো সেখানে থাকা সম্ভব না। তাই টাকা দিয়ে আমরা বেরিয়ে এসেছি। তবে হোটেল কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ মানতে নারাজ। মনসুন ইন-এর মহা-ব্যবস্থাপক এন আরিয়ান বলেন, আমাদের এখান থেকে এমন হবার কথা না। যদি তাদের কারো টিকা দেয়া থাকে তবে তারা হয়তো গেছেন। ৫২টি হোটেলকে বিদেশ ফেরতদের কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য মনোনীত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ কোয়ারেন্টিন তদারকির দায়িত্বও তাদের। সিভিল এভিয়েশন বলছে কোয়ারেন্টিনে না থেকে হোটেলের ছাড়পত্র পাওয়া ভয়ানক ঝুঁকিপূর্ণ।
সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক এই হোটেলগুলোকে মনোনীত করা হয়েছে। সে কারণে তাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে। একজন লোক যদি কোয়ারেন্টিনে ঢুকে চলে যায়, তবে হোটেল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব থাকে সেটা জানানোর। হোটেল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনে প্যানালটি দিতে হবে। বেবিচকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১২টি দেশকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় রেখে সাময়িকভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সব দেশ থেকে শুধু প্রবাসী ও বাংলাদেশি নাগরিকরাই ঢাকায় আসতে পারবে। এ দেশগুলোতে স্থায়ীভাবে বসবাসকারীরা আপাতত বাংলাদেশে ফেরার অনুমতি পাবে না।